Tobacco Industry channeling subsidized irrigation facility to tobacco farmers
Tobacco industry is using their ill tactics such as using government subsidy in an indirect way involving the farmers in tobacco cultivation instead of rice cultivation says in a report published on the Daily Prothom Alo on March 23, 2014.
Rajshahi region is becoming drought prone because of various natural and man-made occurrences. On the top of this crisis for water the expansion of tobacco cultivation is really dreadful for the coming future for food security in this area. Despite the government on principal do not support tobacco cultivation, the Barindra Multipurpose Development Authority (BMDA), a government authority, is providing irrigation support for tobacco cultivation with 20 percent government subsidy. As the government did not come up with a policy on tobacco cultivation till now; the tobacco industry is taking benefits which are helping them to expand their business.
আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী ও ইমাম হাসান, লালপুর | আপডেট: ০১:৪১, মার্চ ২৩, ২০১৪
বাড়ির উঠানের পাশে তামাকের চুলায় (ভাটি) লাকড়ি ঠেলছেন এক মা। পাশেই চৌকিতে শুয়ে তাঁর সন্তানেরা। তামাক চাষে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে পরিবারের কারও কোনো নজর নেই। শুধু বাড়িতেই নয়, বিদ্যালয়ের মাঠেও চলছে তামাকের কারবার।
বাড়তি লাভের আশায় নাটোরের লালপুর উপজেলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বসানো গভীর নলকূপের পানি দিয়ে ধানের বদলে এই তামাক চাষ হচ্ছে। লালপুরের দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর, মনিহারপুর ও গণ্ডবিল গ্রামে তামাক চাষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
চাষিদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, এই তিন গ্রামের ১৪৫টি তামাকের চুলা রয়েছে। তামাক চাষ হয়েছে প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে। আইন অনুযায়ী তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও সরকারি উদ্যোগে এখানে তা হচ্ছে না।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে লালপুরে তামাক চাষ সম্প্রসারণ করেছে। পাশের কুষ্টিয়া জেলা থেকেই তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিদিনই মাঠকর্মীরা এলাকা পরিদর্শন করছেন। কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী তন্ময় সান্যাল বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ১২ ধারায় বলা হয়েছে, তামাক উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করবে সরকার। তিনি বলেন, যাঁরা তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত তাঁদের ‘গ্রিন টোব্যাকো সিকনেস’ নামের এক ধরনের রোগ হয়। ধূমপানের ক্ষতির চেয়েও এটি ভয়াবহ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক রেদওয়ানুর রহমান বলেন, ধূমপায়ীর পাশের অধূমপায়ী বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন। এর চেয়েও দশ গুণ বেশি ঝুঁকি রয়েছে যাঁরা মাঠপর্যায়ে তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এর সংস্পর্শে আসা শিশুদের স্বাস্থ্য ও বুদ্ধি বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তারা রোগাক্রান্ত হবে। এমনকি এর সুদূরপ্রসারী প্রভাবে তারা ক্যানসারের ঝুঁকি নিয়ে বড় হবে।
১১ মার্চ সরেজমিন গ্রাম তিনটি ঘুরে দেখা গেছে, গতবার ধান চাষ হয়েছিল এ রকম বেশির ভাগ জমিতেই এবার তামাক চাষ হয়েছে। যেদিকে চোখ যায়, শুধু তামাক আর তামাক। মনিহারপুর গ্রামের চাষি জালাল উদ্দিন এবার চার বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন। বাড়িতেও তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণের চুলা তৈরি করা হয়েছে।
জালালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর স্ত্রী তামাকের চুলায় লাকড়ি দিচ্ছেন। চুলার পাশেই চৌকিতে ঘুমাচ্ছে তাঁর ছেলেমেয়েরা। তিনি বলেন, চুলা বানাতে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রথমবার ভাটিতে তামাক সাজিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে ৬০ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখতে হয়। তিনি আশা করছেন, এক বিঘা তামাক চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে তাঁর ২০ হাজার টাকা লাভ হবে।
মনিহারপুর-রামকৃষ্ণপুর (এমআর) উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় মাঠের দুই দিকে ফাঁকা জমিতে গত বছর বোরো ধান চাষ হয়েছিল। সেই জমিতে এবার তামাক চাষ হয়েছে। তামাক কেটে রাখা হচ্ছে বিদ্যালয়ের মাঠে। সেখান থেকে ভ্যানে সাজিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তামাকবোঝাই মাঠেই খেলাধুলা করছে শিশুরা। বিদ্যালয় মাঠে তামাক নিয়ে কাজ করছিলেন কৃষক খোরশেদ আলী। তিনি বলেন, গতবার ধান চাষ করে উৎপাদন খরচ উঠেনি। বাধ্য হয়ে তামাক চাষ করেছেন।
রামকৃষ্ণপুর মাঠে বিএমডিএর বসানো গভীর নলকূপের পানি দিয়ে এবার এই তামাক চাষ হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাষি বলেন, ধান চাষে অনেক পানি লাগে। গতবার এক লাখ টাকারও বেশি পানির বিল হয়েছিল। তামাকে কম পানি লাগে। এবার হয়তো বিএমডিএ ২০ হাজার টাকার বেশি পানির বিল পাবে না।
বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আহসান জাকির বলেন, কৃষক বিএমডিএর পানি দিয়ে যেকোনো আবাদ করতে পারে। তবে তাঁরা নীতিগতভাবে তামাক চাষ সমর্থন করেন না। সরকার তাঁদের ২০ ভাগ ভর্তুকি দিয়ে নিশ্চয়ই তামাক চাষ করাবে না। কোথায় বিএমডিএর নলকূপের পানি দিয়ে তামাক চাষ হচ্ছে, তা জানতে পারলে অবশ্যই তা বন্ধ করার ব্যবস্থা নেবেন।
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, লালপুরে তাঁর জানামতে ২২ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। তাঁরা নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ধান চাষের চেয়ে দুই-তিন গুণ বেশি আয় হয়। কৃষক তামাক কোম্পানির পক্ষ থেকে ঋণসুবিধাও পায়। এ জন্য তাঁরা নিষেধ শোনেন না।
Source: Prothom-alo