বিড়ি শ্রমিকের সংখ্যা ২১ লক্ষ মানলে, ১জন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১.২২ টাকা!
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিড়িতে কর ঠেকানোর কৌশল হিসেবে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন “ধ্বংসের পথে বিড়ি শিল্প” শিরোনামে একটি গবেষণামূলক পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। পুস্তিকার বেশিরভাগ তথ্যই অসঙ্গতিপূর্ণ। সিগারেট কোম্পানি সম্পর্কে কিছু সঠিক তথ্য সন্নিবেশিত করা হলেও তা বিষদগার আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভাবটা এরকম যেন সবক্ষতি সিগারেটে, বিড়িতে কোন ক্ষতি নেই। তবে সবচেয়ে ভৌতিক এবং আত্মঘাতি তথ্য দিয়েছে শ্রমিকসংখ্যা ও বাৎসরিক বিড়ি উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ে। পুস্তিকায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের ৯০টি বিড়ি ফ্যাক্টরীতে মোট ২১ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৯০টি বিড়ি ফ্যাক্টরীতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা ২১,০৫,৩২৫ (২১ লক্ষ ৫ হাজার ৩২৫) জন এবং এ সকল শ্রমিকের দ্বারা উৎপাদিত বিড়ির পরিমাণ ৩৭০০ কোটি শলাকা। তাহলে, হিসেব অনুযায়ী ১জন শ্রমিক প্রতিদিন বিড়ি তৈরি করে ৪৮.১৮ (প্রায় ৪৯) শলাকা। অর্থাৎ একজন শ্রমিক প্রতিদিন গড়ে ২ প্যাকেট (২৫ শলাকার) বিড়ি উৎপাদন করে, যার বাজার মূল্য প্রায় ১২ টাকা। অন্যদিকে ১০০০ হাজার বিড়ি তৈরি করলে ১জন শ্রমিক মজুরি হিসেবে পায় মাত্র ২৫ টাকা।
প্রশ্ন, যদি বিড়ি ফ্যাক্টরীতে সত্যিই ২১ লক্ষ লোক কাজ করে তবে একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি কত? পাটিগণিতের সহজ হিসাব। মাত্র ১.২২৫ টাকা।
[প্রতি ১০০০ শলাকা বিড়ি উৎপাদনে ১জন শ্রমিক আয় করে ২৫ টাকা। সুতরাং ৪৯ শলাকা বিড়ি উৎপাদনে ১জন শ্রমিক আয় করে ২৫*৪৯/১০০০= ১.২২৫ টাকা]
উল্লেখ্য, এই পরিসংখ্যান ব্যবহার করেই তারা ২০০৯-১০ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আদায়ের মাধ্যমে বিড়ির উপর প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার ঐ অংশটুকুও তারা অত্যন্ত কৌশলে তাদের পুস্তিকায় ব্যবহার করেছে। লোকজন পড়ে যাতে বোঝেন-এটি আওয়ামি লীগ-এর ইস্তিহারের অঙ্গীকার!
উল্লেখ্য, সুশীল সমাজের কতিপয় সদস্য এসব ভুল তথ্যাদি উপস্থাপনের মাধ্যমে এভাবেই নীতি-নির্ধারক ও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যাতে এবারের বাজেটেও বিড়ির উপর প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিস্তারিত:The daily star