৪০ হাজার হেক্টর জমিতে তামাকের আবাদ
তামাক কোম্পানিগুলোর লোভনীয় আশ্বাসের প্রতিবছরই বাড়ছে চাষের ব্যাপকতা। কিন্তু কুষ্টিয়ায় মানা হচ্ছে না তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন। এই তামাক চাষের কারণে কুষ্টিয়া জেলায় খাদ্যশস্য ঘাটতির পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের খাদ্যশস্য আবাদে উদ্বুদ্ধ করলেও তামাক কোম্পানিগুলোর লোভনীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণেই কোনো পরামর্শই কাজে লাগে না। একসময় কুষ্টিয়ার বিশাল এলাকাজুড়ে ধান, গম, আখ, মসুর, ছোলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ হতো।উৎপাদিত খাদ্যশস্য দিয়েই পূরণ হতো জেলার খাদ্যের অভাব। বর্তমানে ওই সব জমিতে আবাদ হচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাক। কুষ্টিয়া জেলায় আবাদযোগ্য জমি রয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার হেক্টর। সেখানে জেলায় চলতি মৌসুমে তামাকের আবাদ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টরে। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ধূমপান করে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিটি সিগারেট ১১ মিনিট করে মানুষের জীবন থেকে আয়ু কেড়ে নিচ্ছে।ধূমপানের কারণে করোনারি, হার্ট অ্যাটাক, প্যারালাইসিস, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা, ফুসফুসের ক্যানসার, চোখের সমস্যা, দাঁত ও মাড়ির সমস্যাসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় চার লাখ লোক ধূমপানের কারণে পঙ্গুত্ববরণ করছে। এর মধ্যে মারা যাচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার।তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০৫-এর ৪ ধারায় বলা হয়েছে, পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনে ধূমপান দণ্ডনীয় অপরাধ। এর পরও ওই আইন মানা বা কার্যকর করা হচ্ছে না। তামাক চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি, ঢাকা টোব্যাকো ও আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি চাষিদের অর্থের লোভ দেখিয়ে বিষবৃক্ষ তামাক চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছে। যে কারণে অধিক লাভের আশায় চাষিরা খাদ্যশস্যের আবাদ ছেড়ে দিয়ে ব্যাপকহারে তামাক চাষ বৃদ্ধি করেছেন। সিগারেট বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সিগারেট কোম্পানিগুলো আকর্ষণীয় পুরস্কার ঘোষণা করায় দোকানিদের সিগারেট বিক্রি বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মানিরোধ সমিতি নাটাব কুষ্টিয়ার সদস্যসচিব বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করলেও তার সঠিক বাস্তবায়ন না করায় এর চাষ বেড়ে চলেছে। মাঝেমধ্যে ধূমপানকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও মাত্র ৫০ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। এতে ধূমপান বন্ধ হচ্ছে না।
Source:bdpress.net,6 january 2014