ছবিসহ সতর্কবাণী না ছাপতে নানা যুক্তি তামাক কোম্পানির

সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের মোড়কে যাতে ছবিসহ সতর্কবাণী ছাপতে না হয়, সে জন্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য এবং আইন মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠির পর চিঠি দিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, তামাকজাত দ্রব্য সেবনের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫৭ হাজার মানুষ মারা যান, পঙ্গু হন ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম সম্মেলনে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল’ স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩ পাস করে। এর বিধিমালাটি গত বছরের ১৯ মার্চ গেজেট আকারে প্রকাশিতও হয়। আইনটির ১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিধিমালা প্রকাশের এক বছরের মধ্যে সব তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটার দুই পাশে ওপরের দিকে ৫০ ভাগ পরিমাণ জায়গাজুড়ে তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর দিক নিয়ে রঙিন ছবি ও লেখাসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা বাধ্যতামূলক। এখন সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ আইন মানার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার কথা বলছে।
বাংলাদেশ সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদেরের কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, আইনে আছে, সচিত্র সতর্কবাণী এমনভাবে ছাপাতে হবে, যেন তা স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল কিংবা অন্য কোনো কারণে ঢেকে না যায়। মূসক আইনে স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল যেভাবে লাগাতে বলা হয়েছে, তাতে করে ছবি ঢাকা পড়ে যাবে। তাদের দাবি, ছবির নমুনা বিধিমালা পাস হওয়ার ছয় মাস পরও তাদের হাতে তা পৌঁছায়নি। ছবি হাতে পাওয়ার পর তারা বলেছে, এই ছবিগুলো ছাপানোর কারিগরি দক্ষতা নেই। এ ছাড়া বিক্রেতাদের কাছে থাকা বা চলমান মজুতের ওপর উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সতর্কবাণী ছয় মাস পরপর পরিবর্তন হবে। কাজেই মাঝামাঝি সময়ে দুই ধরনের সতর্কবাণী পাওয়া যেতেই পারে ইত্যাদি। আইন মানার জন্য এক বছরের সময়সীমাটি বড্ড কম, এটা ১৮ মাস হলে ভালো হতো ইত্যাদি।
মন্ত্রণালয়েরই আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, তারা জানতে পেরেছে, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একটা ছবিসহ সতর্কবাণী প্রকাশের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ আনার একটা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ মঞ্চের আহ্বায়ক সাবের হোসেন চৌধুরী গত ১৭ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বরাবর চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘জেনে উদ্বিগ্ন হলাম, বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো রাষ্ট্রের এই বিধান প্রতিপালনে টালবাহানা শুরু করেছে।’ তিনি স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোলটি সিগারেটের মোড়কের পাশে লাগানো হলেই আর ছবি ঢাকা পড়বে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন। এমনকি মোড়কের নমুনাও পাঠান।

Source: prothom-alo,জানুয়ারি ০৫, ২০১৬

About Tobacco Industry Watch

House 6 (3rd Floor, East Side), Main Road 3, Block A, Section 11, Mirpur, Dhaka-1216
Tel: +88-02-9005553, Fax : +88-02-8060751,
URL : www.tobaccoindustrywatchbd.org, Skype ID: progga.bd

Email: progga.bd@gmail.com, info@tobaccoindustrywatchbd.org