এসডিজি বাস্তবায়ন ও জাতীয় সিএসআর পলিসি চূড়ান্তকরণে অবদান রাখবে বিএটিবি!
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশে ‘করপোরেট রেসপনসিবিলিটি নেটওয়ার্ক (সিআরএন)’ নামে একটি প্লাটফর্ম আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে, যার অন্যতম উদ্যোক্তা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)। এর আগে, নেটওয়ার্ক গঠন সংক্রান্ত একটি খসড়া এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়কের কাছে হস্তান্তর করা হয় (এসআর এশিয়া বাংলাদেশ চ্যাপ্টার রিপোর্ট ২০১১-২০১৭, পেজ ৫, সেকশন ২)। সরকারের জাতীয় সিএসআর পলিসি চূড়ান্তকরণেও নেটওয়ার্কটি কাজ করবে বলে জানা গেছে। ‘Social Responsibility Asia - SR Asia Bangladesh’ এই নেটওয়ার্কের প্রবর্তক।
উল্লেখ্য, বিএটিবি দীর্ঘদিন যাবত এই নেটওয়ার্ক গঠন প্রক্রিয়ার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে (বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৭)। নেটওয়ার্ক তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন কাজে ‘এসআর এশিয়া বাংলাদেশ’কে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে বিএটিবি। ২০১৭ সালে বিএটিবি’র সভাকক্ষে ‘স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট মিটিং’ আয়োজন করে ‘এসআর এশিয়া বাংলাদেশ’ (ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট, পেজ ১৭, সেকশন ৪.৩), যেখানে বিএটিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করে। নেটওয়ার্ক গঠনে বিএটিবি’র এই ধারাবাহিক সহায়তার বিষয়টি ‘এসআর এশিয়া বাংলাদেশ’ এর পক্ষ থেকেও স্বীকার করা হয়েছে (কনফারেন্স প্রসিডিং, পেজ ১৪, প্যারা ২)। ‘করপোরেট রেসপনসিবিলিটি নেটওয়ার্ক’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও বিএটিবি’র সিএসআর বিষয়ক প্রজেক্ট বনায়ন, প্রবাহ এবং দীপ্ত’র লোগো ব্যবহার করা হয়। ‘এসআর এশিয়া বাংলাদেশ’ ২০১৭ সালে সিএসআর এবং এসডিজি বিষয়ক ‘Propagating CSR Programmes by Corporate in Bangladesh’ শীর্ষক একটি কনফারেন্স আয়োজন করে। এই কনফারেন্সের উপদেষ্টা কমিটি এবং টেকনিক্যাল টিমে ছিল বিএটিবি’র দুইজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই কনফারেন্স এর অন্যতম প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করে, যা ইউএনডিপি’র ‘Policy On Due Diligence And Partnerships with the Private Sector (2013)’ এর পরিপন্থী। কনফারেন্স এর উদ্বোধন পর্বের মূল উপস্থাপনা হিসেবে বিএটিবি’র সিএসআর (বনায়ন, দীপ্ত, প্রবাহ) কার্যক্রমের প্রভাব বিষয়ক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয় (কনফারেন্স প্রসিডিং, পেজ ১২, প্যারা ২)। সেখানে দাবি করা হয়, বিএটিবি তাদের সিএসআর কার্যক্রমের মাধ্যমে এসডিজি’র ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৯টি লক্ষ্য পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। অথচ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (২০১৬ সালে এক আর্ন্তজাতিক সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে) তামাককে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় একটি বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, তামাকের উৎপাদন ও ব্যবহার এসডিজির প্রায় প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে (তামাক না টেকসই উন্নয়ন, প্রজ্ঞা, ২০১৬)। তামাক কোম্পানির আগ্রাসন ও তামাকের সার্বিক ভয়াবহতা বিবেচনা করে এসডিজি’র তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা ইউএনডিপি তামাক কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ততা পরিহারের নীতি গ্রহণ করেছে (পেজ ৪, টেবিল ১, কলাম ৫)। সুতরাং বাংলাদেশ সরকারেরও উচিত হবে এসডিজিসহ সকল উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানির অংশীদারিত্ব বর্জন করা।
Source: Tobacco Industry Watch BD Team@PROGGA