Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: April 2019
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

তামাক কোম্পানিকে ছাড় দেওয়ার অর্থ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন সংক্রান্ত নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা। অথচ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বছরের পর বছর এই ছাড় প্রদানের কাজটিই খুব গুরুত্বসহকারে করে আসছে। আসন্ন ২০১৯-২০ বাজেটে তামাক ও তামাকজাতপণ্য রপ্তানিতে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে মর্মে অগ্রিম ঘোষণা প্রদান করেছে এনবিআর। তামাক রপ্তানির ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন না করে এ ধরনের ঘোষণা প্রদান অযৌক্তিক। কারণ তামাক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সাথে আর্থ-সামাজিক, পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংক্রান্ত হাজারো ক্ষয়ক্ষতি জড়িত রয়েছে। তামাকের এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তামাককে টেকসই উন্নয়নের পথে অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তামাক থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় আসে তারচেয়ে বেশি খরচ হয় তামাকজনিত অসুস্থতায় এবং তামাক রাজস্বের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ দেশের বাইরে চলে যায়। সম্প্রতি ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালেই বিএটি বাংলাদেশ রয়্যালটি, কারিগরি ও পরামর্শক ফি এবং আইটি সার্ভিস বাবদ ২১ মিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যে স্থানান্তর করেছে। এক্ষেত্রে, বিএটিবি তার মুনাফার ওপর বিদ্যমান ৪৫ শতাংশ হারে কর্পোরেট কর প্রদান না করে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ১০- ২০ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করেছে। এতে বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার কর রাজস্ব হারিয়েছে, যা দিয়ে দেশের ২ লক্ষ মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় বহন করা সম্ভব। বিএটিবি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের জন্য নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ না করায় সরকার ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর আগে মধ্যম মূল্যস্তরের সিগারেট নিম্নস্তরে ঘোষণা দিয়ে ১,৯২৪ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করতে হয়েছে কোম্পানিটিকে।

জাতীয় বাজেটকে ঘিরে তামাক কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে সংঘবদ্ধ মিডিয়া ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। তামাক কোম্পানির বক্তব্য করারোপের মাধ্যমে সিগারেটের দাম বাড়ালে চোরাচালান ও অবৈধ বাণিজ্য বাড়বে এবং সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। অথচ সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সিগারেটের অবৈধ বাণিজ্য ২৭টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম মাত্র ১.৮ শতাংশ এবং তামাকের ওপর কর বাড়ানোর সঙ্গে অবৈধ বাণিজ্য বাড়ার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং নীতিনির্ধারকদের তামাক কোম্পানি দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়ে জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আসন্ন বাজেটে কার্যকরভাবে করারোপের মাধ্যমে সকল তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে হবে।