E-newsletter: October 2020 | ||||
জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1 মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2 Death Marketing Around |
||||
জনস্বাস্থ্য সবার উপরে
বিএটিবি পরিচালিত প্রেরণা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের মিশন নিয়ে কাজ করছে বলে দাবি করছে। অথচ তামাকের উৎপাদন ও ব্যবহার এসডিজি’র প্রায় প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করে (তামাক না টেকসই উন্নয়ন, প্রজ্ঞা, ২০১৬)। এসডিজি’র ৩য় লক্ষ্যমাত্রা- সুস্বাস্থ্য অর্জনের অন্যতম অন্তরায় তামাক। তামাকের কারণে বাংলাদেশে ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং পঙ্গুত্ববরণ করে আরো কয়েক লক্ষ মানুষ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ব্যয় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে তামাক ব্যবহারে দরিদ্র মানুষ, আরও দরিদ্র হয়, যা এসডিজির (লক্ষ্যমাত্রা-১) অর্জনে বড় বাধা। ক্রমবর্ধমান তামাকচাষের কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি (লক্ষ্যমাত্রা-২) ক্রমশঃ হুমকির মুখে পড়ছে। মানসম্পন্ন শিক্ষা (লক্ষ্যমাত্রা-৪) এবং লিঙ্গ সমতা (লক্ষ্যমাত্রা-৫) টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলেও বাংলাদেশের বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন চলছে মূলত শিশু ও নারী শ্রম ব্যবহার করে। কারখানার শিশুশ্রমিকরা পাচ্ছেনা শিক্ষা লাভের সুযোগ। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার না করেও, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারী। এছাড়াও তামাকচুল্লিতে পাতা পোড়াতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে দেশের ৩০ শতাংশ বন। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের (লক্ষ্যমাত্রা ১৩) ঝুঁকি ক্রমশ: বেড়ে চলেছে। সুতরাং তামাকপণ্য উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহারজনিত ক্ষয়ক্ষতি প্রভৃতি সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করলে দেখা যায়, তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অন্তরায়। তামাকের এসব ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তামাককে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করছেন। তামাক কোম্পানির আগ্রাসন ও তামাকের সার্বিক ভয়াবহতা বিবেচনা করে এসডিজি’র তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা ইউএনডিপি তামাক কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ততা পরিহারের নীতি গ্রহণ করেছে (পেজ ৪, টেবিল ১, কলাম ৫)। এসডিজি বাস্তবায়নের এই দৃশ্যমান আগ্রহ প্রকৃতপক্ষে কোম্পানিটির পাবলিসিটি বা প্রচারণার স্বার্থে করা কূটকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার এবং দেশের নীতি নির্ধারণী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে নিজেদের অংশীদারিত্বের একটি মিথ্যা ইমেজ তৈরি করে সরকার ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে নিজেদের অনুপ্রবেশের পথ তৈরি করছে কোম্পানিটি। এই ব্যাপক মুত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির উৎসমূল তামাক কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত ফাউন্ডেশন কোনভাবেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির আকাক্সক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে না। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্রযন্ত্রে তামাক কোম্পানির এধরনের ছদ্মবেশী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। |
||||