Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: February 2014
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

মৃত্যু বিপণন-১

তামাক কোম্পানির মৃত্যু বিপণন ফাঁদে নিরীহ কৃষক

তামাক কোম্পানির আগ্রাসনে মাঠের পর মাঠ ফসলী জমি, সংরক্ষিত এলাকা ও সরকারি খাসজমি ক্রমশঃ তামাক চাষে স্থানান্তরিত হচ্ছে। তামাকচাষ সংক্রান্ত এধরনের খবরাখবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এখন বেশ গুরুত্বসহকারেই প্রকাশিত হচ্ছে। এসব খবরাখবর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মৃত্যু বিপণনকারী তামাক কোম্পানিগুলো চতুরতার সাথে তামাক চাষিদেরকে মৃত্যু ফাঁদে আটকে ফেলছে। চাষিদের সরলতাকে পুঁজি করে তারা কৃষকদেরকে নানামুখি প্রলোভন দেখিয়ে তামাক চাষের দুষ্ট-চক্রে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে, দ্রুততম সময়ে দেশব্যাপী তামাক চাষের সম্প্রসারণ চোখে পড়ছে। Yearbook of Agricultural Statistics of Bangladesh 2011- এর তথ্যেও ক্রমবর্ধমান তামাক চাষের সত্যতার প্রমাণ মেলে ( গ্রাফ দেখুন)

তামাক কোম্পানিগুলি `ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ এর ফাঁক-ফোকর গলিয়ে অথবা নানাভাবে উক্ত আইন অমান্য করে যেমন সারাদেশে তাদের মৃত্যু-দাওয়া ফেরি করছে, ঠিক তেমনি তামাক চাষের সম্প্রসারণ ঘটাতেও তারা নানাবিধ কূট-কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এসংক্রান্ত খবরাখবর বিশ্লেষণ করলে তামাক কোম্পানির প্রলোভন ও কূট-কৌশলের নিন্মোক্ত চেহারা চোখে পড়েঃ
• তামাক কোম্পানি খুব সহজ প্রক্রিয়ায় কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ যেমন: বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করে।
• তামাক কোম্পানি বিনাসুদে ঋণ প্রদান করে, আগাম টাকা দেয় এমনকি ফাঁকা ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়েও কৃষকদেরকে ঋণ সরবরাহ করে।
• কৃষকদের কাছ থেকে আকর্ষণীয় মূল্যে তামাক ক্রয়ের নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং অগ্রিম দাম নির্ধারণ করার মধ্য দিয়ে অধিক লাভের প্রত্যাশা জাগিয়ে তোলার কাজ করে।
• কোম্পানির কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে অর্থ সহায়তাসহ তাঁদের মাঝে প্রচারণা চালায় যে তামাক চাষে সার ও সেচ কম লাগে, তামাক চাষে রোগবালাই নাই এবং খাদ্যশস্যের চেয়ে বিশেষ করে ধানের চেয়ে তামাকে লাভ বেশি। এছাড়াও কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধকরণসহ, উন্নত চাষের কলাকৌশল বিষয়েও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
• জমির মালিকরা তামাকচাষে জমি লিজ দিতে বেশি আগ্রহী। ৪০ শতাংশ জমি ১ বছরের জন্য খাদ্য ফসল উৎপাদনে লিজ দিলে ১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। অথচ তামাক চাষের জন্য ওই একই পরিমাণ জমি থেকে লিজ মূল্য আসে ২৫-৩০ হাজার টাকা। এর ফলে তামাক ছাড়া অন্য ফসল চাষের জন্য জমি পাওয়া কঠিন হয়ে পরেছে। যে কারণে দরিদ্র কৃষকরা বিশেষ করে যাদের নিজের কোন জমি নেই তারা তামাক চাষ করতে একপ্রকার বাধ্য হন।

দেশের বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল, পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর তীর ও চরাঞ্চলসহ যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার চাষিদের মধ্যে তামাক কোম্পানির আগ্রাসী অপকৌশল প্রয়োগ দিনকে দিন বেড়েই চলছে। ফলে এ বছর মোট ১ লক্ষ ৮ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ হাজার হেক্টর বেশি। এটা রোধ না করা গেলে উপরোক্ত অঞ্চলের খাদ্যশস্যের ক্ষেত্র ক্রমশঃ তামাক চাষে বিলিন হয়ে যাবে বলেও প্রতিবেদনগুলোতে আশংকা করা হয়।