Tobacco Industry invested 30 billion takas to capture international tobacco
The expansion of Tobacco cultivation in recent year is alarming. Tobacco Industry is investing enormous amount of money to capture international market and set export target of USD 1 billion, says a report published May 4, 2014 in the Daily Jugantor by one of the ATMA members Mizan Chowdhury. The tobacco industries are exploiting cheap labour, cheap production cost, easy access to cultivatable land, favourable climate and making maximum profit for their companies. It is to be noted that most developed countries have restrictions in tobacco cultivation so they are using the above mentioned facilities to make their business more profitable day by day. There is no tobacco cultivation policy under the Smoking and Tobacco Products Usage (Control) (Amended) Act 2013. To stop this exploitation the government needs to come up with a policy to regulate cultivation.
See the full report:
বাজার ধরতে ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ
মিজান চৌধুরী
প্রকাশ : ০৪ মে, ২০১৪
কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকারা গ্রামের কৃষক দেলোয়ার ক্ষেতের তামাক বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ১০৬ টাকা। খুব বেশি মুনাফা হয়নি তার তামাক উৎপাদনে। এ তামাকের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য হচ্ছে ৩৭৭ টাকা। দেলোয়ারের কঠোর পরিশ্রমের তামাক টোব্যাকো কোম্পানিগুলো রফতানি করে কেজিতে আয় গুনছে ২৭১ টাকা।
বিশ্ববাজারে মার্চে তামাকের এ মূল্য বিদ্যমান থাকলেও আগামীতে আরও দাম বাড়বে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববাজারে তামাকের মূল্য ও চাহিদা বৃদ্ধি, রফতানিতে অধিক মুনাফা, উৎপাদনে কম খরচ, জমির সহজলভ্যতা ও উন্নত দেশগুলোতে উৎপাদনে আট ধরনের প্রতিবন্ধকতায় থাকায় দেশে তামাক রফতানি অস্বাভাবিক বাড়ছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০০৭ সালে বিশ্ববাজারে ১ কেজি তামাকের মূল্য ছিল ১৫৫ টাকা। মাত্র ছয় বছরের মাথায় দাম বেড়ে ৩৭৭ টাকায় উঠেছে। এ মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাড়ছে তামাক রফতানি। রফতানি বৃদ্ধির প্রভাব গিয়ে পড়ছে চাষের ওপর। কারণ রফতানি বৃদ্ধির সঙ্গে চাষের পরিমাণও বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রে চলতি বছর ১ লাখ ৮ হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। গত বছর চাষের জমির পরিমাণ ছিল ৭৮ হাজার হেক্টর। এ ১ বছরে চাষের পরিমাণ বেড়েছে ৩০ হাজার হেক্টর।
তামাক রফতানি বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে তামাক উৎপাদনে বেশকিছু সমস্যা ও অন্তরায় রয়েছে। যে কারণে উন্নত দেশগুলো তামাক চাষের চেয়ে আমদানিনির্ভর বেশি। ওইসব দেশে শ্রমিক সংকট, ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন খরচ, ঝুঁকি, উৎপাদিত তামাকের কম মূল্য, সেচ সমস্যা, রোগাক্রান্ত পরিকল্পনা, উৎপাদনজনিত তামাক পণ্যের জন্য অতিমাত্রায় ব্যয় হচ্ছে তামাক উৎপাদনের বড় অন্তরায়। পাশাপাশি বাংলাদেশে রফতানিতে অধিক মুনাফা, স্বল্প মজুরির শ্রমিক প্রাপ্যতা, জমির সহজলভ্যতা, বাজারজাতের সুবিধা, জমিতে অধিক পরিমাণ উৎপাদন, সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তাসহ বিভিন্ন সুবিধার কারণে তামাক রফতানি ও উৎপাদন বাড়ছে। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় প্রতি একর জমিতে উৎপাদন বেশি হচ্ছে। প্রতিযোগী দেশগুলোতে এক একর জমিতে তামাক উৎপাদন হচ্ছে ৪০০ কেজি। কিন্তু দেশের ভেতর উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ কেজি। মূলত জলবায়ুর কারণে এ সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ। ফলে নানাবিদ সুযোগ নিয়ে এবং ঊর্ধ্বমুখী রফতানি বাজার ঘিরে তামাক কোম্পানিগুলো দেশের ভেতর প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তামাক রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। জুলাই থেকে ফেব্র“য়ারি এ সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে তামাক রফতানি হয়েছে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের। অথচ আজ থেকে ৯ বছর আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে তামাক রফতানি করে মাত্র ৭০ লাখ ডলার আয় করেছে। এ ৯ বছরে রফতানি আয় বেড়েছে ৫ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তামাক কোম্পানির এক উদ্যোক্তা বলেন, এ শিল্প থেকে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু ২০১০-১১ অর্থবছরের বাজেটে তামাক রফতানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়। অনেকটা থমকে দাঁড়ায়।
ইপিবির রফতানির তালিকায় যুক্তরাজ্য, ভারত, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, বেলজিয়াম, কানাডা, জার্মানি, ডেনমার্ক, স্পেন, ফ্রান্স, গ্রিস, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, কোরিয়া, লেবালন, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, রাশিয়ান ফেডারেশন, সুইডেন, স্লোভেনিয়া তামাক রফতানি করছে বাংলাদেশ। আর রফতানির বাজার ঘিরে দেশের ভেতর উৎপাদন বাড়িয়ে চলছে। উন্নত অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বল্প আয়ের দেশ হিসেবে উৎপাদনের জন্য বেছে নিয়েছে। উৎপাদিত পণ্য আবার রফতানির মাধ্যমে নিয়ে যাচ্ছে। মূলত ব্যবহার করা হচ্ছে এদেশের স্বল্প আয়ের শ্রমিক ও মাটির সহজলভ্যতাকে।
অথচ যাদের উৎপাদিত তামাক বিদেশ রফতানি করা হচ্ছে ওইসব কৃষক গুনছে লোকসান। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকারা গ্রামের দেলোয়ারের সঙ্গে কথা। পড়ন্ত বিকালে ক্ষেতের সীমানা ধরে হেঁটে হেঁটে কথা বলার সময় দেলোয়ার জানায়, এ বছর ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে দু’কানি জমিতে তামাক চাষ করেছেন। তার আশা মৌসুমে ৪০ হাজার টাকার মতো আয় হতে পারে। তিনি আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ভালোমানের তামাক পাতা ১৪২ টাকা, নিুমানের কেজি ৭০ টাকায় কেনাবেচা চলছে। আক্ষেপ করে বলেন, যা লাভ হবে ওই অর্থের মধ্যে নিজের পরিশ্রম পুরোটাই বাইরে থাকছে।
তামাক রফতানি আকস্মিক বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ির সচিব মাহবুব আহমেদের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, রফতানি বৃদ্ধির কারণে চাষাবাদ বাড়লে বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয় দেখবে। সরকারিভাবে তামাক বাজারজাত নিষিদ্ধ করা হয়নি। ফলে তামাক রফতানি বাড়লে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সব পণ্যের রফতানির বিষয়টি দেখভাল করা হয়। তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলো তামাক উৎপাদন করছে, রফতানি করছে এতে আমাদের কিছু করার নেই। তবে তামাক রফতানি বৃদ্ধিতে চাষ বেড়ে অন্য কোনো পণ্যের ক্ষতি হলে সেটি কৃষি মন্ত্রণালয় দেখবে।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব আহমেদ বলেন, তামাক চাষের কারণে খাদ্য উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। রফতানি বাড়লে চাষও বাড়বে। এজন্য একটি নীতিমালা থাকা দরকার। নীতিমালা না থাকলে তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
বিশ্বের রফতানি বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্রাজিল বছরে তামাক রফতানি করছে ৫৮৫ কোটি মার্কিন ডলার, আমেরিকার রফতানি করছে ২২৮ কোটি ডলার, ভারত রফতানি করছে ১২৬ কোটি ডলার, তুর্কি রফতানি করছে ১২৬ কোটি ডলার, মালয়েশিয়া রফতানি করছে ১২৩ কোটি ডলার এবং চীন রফতানি করছে ১১৩ কোটি ডলার, ইতালি রফতানি করছে ৮৫ কোটি ডলার।
বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ তামাক অর্থাৎ ২৭ শতাংশ তামাক উৎপাদন করছে চীন, ব্রাজিল, ভারত ও আমেরিকা মিলে। বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৪০ ভাগ চীন উৎপাদন করছে। আমেরিকার উৎপাদন করছে ১০ শতাংশ। উৎপাদনের পরিমাণের দিক থেকে চীন ২৩ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন, ব্রাজিল ৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৯৩ মেট্রিক টন, ভারত ৫ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন, আমেরিকা ৩ লাখ ৫৩ হাজার মেটিক টন, ইন্দোনেশিয়া ১ লাখ ৭০ হাজার টন ও পাকিস্তান ১ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিক টন।
Source: Jugantor