Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: May 2016
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

২০১৬-১৭ বাজেটে প্রস্তাবিত তামাক-কর জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নয়, বিএটিবি’র মৃত্যুবিপণনকে ত্বরান্বিত করবে। বিএটিবি’র বাজারজাতকৃত ১৪টি ব্রান্ডের মধ্যে ১০টিই উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরে অবস্থিত। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটে মাত্র ১ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। গত একবছরে জনগণের আয়বৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি হিসেব করলে এই কর প্রস্তাব কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। উল্লেখ্য, মাননীয় অর্থমন্ত্রী গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তামাকের বিদ্যমান কর-কাঠামো ঢেলে সাজানোর জন্য নির্দেশনা দেন এবং এ বিষয়ে কাজ করার জন্য তিনি পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এর সাথে আলোচনারও পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২৫ এপ্রিল পিআরআই এর সাথে প্রাক-বাজেট আলোচনা করে এবং এই আলোচনার ভিত্তিতেই ২০১৬-১৭ বাজেটে উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটে কর প্রস্তাব করা হয়। দেশে নামকরা এতসব সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থাকতে মাননীয় অর্থমন্ত্রী কেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে তামাক-কর বিষয়ে আলোচনার পরামর্শ দিলেন তা বোধগম্য নয়। অন্যান্য অনেক বিষয়ে সুখ্যাতি থাকলেও, পিআরআই বিগত কয়েক বছর ধরে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১২ সালে বিএটিবি’র অর্থায়নে তামাকচাষের আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত ইতিবাচক প্রভাব বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা ও এসংক্রান্ত গ্রন্থ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালে পিআরআই এর তামাক-কর বিষয়ে বাজেট প্রস্তাবনা হুবহু বিএটিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাক্ষাতকার হিসেবে পত্র-পত্রিকায় (দৈনিক কালেরকণ্ঠ, ১৮ মে ২০১৫ ও দৈনিক যুগান্তর, ১৫ মে ২০১৫) ছাপা হয়। এবছরেও বাজেটের আগে গত ১৫ এপ্রিল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ও পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালককে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। জানা গেছে বিএটিবি’র অর্থায়নেই এই টকশো আয়োজন করা হয়। কাজেই পিআরআই-এর সিগারেট কর বিষয়ক বাজেট প্রস্তাবনা যে বিএটিবি’র স্বার্থসংরক্ষণ করবে সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের প্রত্যাশা ছিল মাননীয় অর্থমন্ত্রী অন্তÍত জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করবেন। উল্টো তিনি তামাক কর বিষয়ক নীতিমালা/প্রস্তাবনা তৈরিতে তামাক কোম্পানির মদদপুষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আলোচনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন যা আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আর্টিকেল ৫.৩ অনুযায়ী, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত থেকে সরকারকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।
এভাবে তামাক কোম্পানিগুলোকে কর সুবিধা প্রদানের চেষ্টা অব্যহত থাকলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।