Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: June 2018
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

তামাক পণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে প্রচলিত সনাতন পদ্ধতি ছেড়ে আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণে যেন ভীষণ আপত্তি সরকারের! ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেটে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যে করারোপের ক্ষেত্রে ’এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস’ সনাতন পদ্ধতি বাতিল করলেও শেষ পর্যন্ত ‘ট্যারিফ ভ্যালু’ নামের আরেক সনাতন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে সরকার। ফলে ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোগুলো তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের অভাবনীয় সুযোগ পাবে। কিন্তু সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি ১০ গ্রাম ধোঁয়াবিহীন তামাক থেকে সরকার পেত ১৯.৭৬ টাকা এবং তামাক কোম্পানি পেত মাত্র ৬.২৪ টাকা। কিন্তু চূড়ান্ত বাজেটে প্রতি ১০ গ্রাম জর্দা ও গুলের জন্য যথাক্রমে ১২ টাকা এবং ৬ টাকা ট্যারিফ ভ্যালু নির্ধারণ করে এর উপর ১০০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় প্রায় ৫৪% হ্রাস পাবে এবং একই পরিমাণ তামাক বিক্রয় করে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১১৮% বেশি আয় করতে সক্ষম হবে। অধিকন্তু, চূড়ান্ত বাজেটে সর্বনিম্ন খুচরা বিক্রয়মূল্য শর্ত প্রত্যাহার করায় নিজেদের এই অস্বাভাবিক আয়বৃদ্ধির হার কিছুটা কমিয়ে হলেও তামাক কোম্পানিগুলো সস্তায় ভোক্তাদের হাতে তামাকপণ্য তুলে দিতে মরিয়া হবে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে জর্দা ও গুলের ব্যবহার প্রত্যাশিত হারে হ্রাস পাবেনা, ফলে জনস্বাস্থ্যও কাক্সিক্ষত মাত্রায় সুরক্ষা পাবেনা।
বাংলাদেশে নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে ধোঁয়াবিহীন তামাক কোম্পানিগুলোর সখ্যতা নতুন কিছু নয়। জর্দা ব্যবসায়ী মো. কাউস মিয়াকে ‘কর বাহাদুর’ উপাধি দেয়া এবং বছর বছর সেরা করদাতার পুরস্কার প্রদান করা সেই ইঙ্গিতই বহন করে। অন্যদিকে, বিড়ি শিল্পকে ২০২০ সালের মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী, তা এখন উল্টো ফল দিচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিড়ি শ্রমিক ও মালিকদের সংগঠন, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গড়ে ওঠা জোটগুলো বিড়ি শিল্প বন্ধের যেকোনো পদক্ষেপ প্রতিরোধ তো করছেই, বিড়ির ওপর যে কোনো ধরনের কর বাতিল, বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প ঘোষণার মতো দাবি তোলার সুযোগও পাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে কর ও মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকপণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার পরীক্ষিত পদ্ধতিকে অগ্রাহ্য করে বিড়ি শিল্প বন্ধ করে দেয়ার হঠকারী সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের স্বপ্নকেই দূরে সরিয়ে দিয়েছে।