E-newsletter: October 2018 | ||||
জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1 মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2 Death Marketing Around |
||||
জনস্বাস্থ্য সবার উপরে
এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তামাক একটি বড় বাধা হিসেবে স্বীকৃত হলেও সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংগঠনের পক্ষ থেকে ‘এসডিজি অন্তর্ভুক্তকরণ’ এ সেরা অবদানের জন্য বিএটিবি’কে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সরকারের এসডিজি বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে বিএটিবি এই পুরস্কার গ্রহণ করে। এতদিন সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) আড়ালে মৃত্যুবিপণন চালালেও, প্রতিষ্ঠানটি এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মুখোশে তামাক ব্যবসা সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সরকারের কাছে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতেই বিএটিবি’র এই কূটকৌশল । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যুর পরিমাণ বছরে ৮০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে এবং এই মৃত্যুভার (death toll)-এর ৮০ ভাগই বহন করতে হবে বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে। বর্তমানে, বাংলাদেশে ১৫ বছর তদুর্ধ্ব বয়সের জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ (GATS, ২০১৭)। প্রতিবছর তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে (The Tobacco Atlas, ২০১৮)। সুতরাং এসডিজি’র তৃতীয় লক্ষ্যমাত্রা- সুস্বাস্থ্য অর্জনের অন্যতম অন্তরায় তামাক। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। কাজেই তামাক ব্যবহারে দরিদ্র মানুষ, আরও দরিদ্র হয়, যা এসডিজির (লক্ষ্যমাত্রা-১) অর্জনে বড় বাধা। ক্রমবর্ধমান তামাকচাষের কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি (লক্ষ্যমাত্রা-২) ক্রমশঃ হুমকির মুখে পড়ছে। মানসম্পন্ন শিক্ষা (লক্ষ্যমাত্রা-৪) এবং লিঙ্গ সমতা (লক্ষ্যমাত্রা-৫) টেকসই উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলেও বাংলাদেশের বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন চলছে মূলত শিশু ও নারী শ্রম ব্যবহার করে। কারখানার শিশুশ্রমিকরা পাচ্ছেনা শিক্ষা লাভের সুযোগ। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার না করেও, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে বিপুল সংখ্যক নারী। এছাড়াও তামাকচুল্লিতে পাতা পোড়াতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে দেশের ৩০ শতাংশ বন। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের (লক্ষ্যমাত্রা ১৩) ঝুঁকি ক্রমশ: বেড়ে চলেছে। সুতরাং তামাকপণ্য উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহারজনিত ক্ষয়ক্ষতি প্রভৃতি সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করলে দেখা যায়, তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অন্তরায়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন’ শীর্ষক সাউথ এশিয়ান স্পিকার’স সামিট এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে তামাককে একটি বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে বড় হুমকি তামাক কোম্পানি। তারা সুকৌশলে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশীদারিত্ব গ্রহণ করে দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে ব্যাহত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। এক্ষেত্রে এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর আলোকে নীতিমালা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নই হবে তামাক কোম্পানিগুলোর আগ্রাসন মোকাবিলার হাতিয়ার। |
||||