Sun Sun Sun Sun
E-newsletter: June 2022
 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে Public Health On Top

মৃত্যু বিপণন-১ Death Marketing-1

মৃত্যু বিপণন-২ Death Marketing-2

Death Marketing Around

 

জনস্বাস্থ্য সবার উপরে

ই-সিগারেট এবং ভেপিং পণ্যের আমদানি, ক্রয়-বিক্রয় এবং বিপণন নিষিদ্ধের প্রস্তাব করে তামাকনিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে এই প্রস্তাবটি খসড়া সংশোধনী থেকে বাদ দিতে ইতোমধ্যে নানাবিধ প্রচারণা শুরু করেছে বাংলাদেশ ইলেক্ট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বেন্ডস্টা)। সংগঠনটি বলছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাসহ অন্যান্য উন্নত দেশের সরকার ধূমপান ছাড়ার অন্যতম বিকল্প হিসেবে ভেপিংকে বেছে নিচ্ছে, যা মোটেও সত্য নয়। তরুণদের মধ্যে ভেপিং আসক্তি ঠেকাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে এসব দেশ এবং ইতোমধ্যে পৃথিবীর ৩২টি দেশ ভেপিং নিষিদ্ধ করেছে। বেন্ডস্টার দাবি, ভেপিং সিগারেটের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ক্ষতিকর এবং পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষেত্রে ভেপিংয়ের বাস্প ক্ষতি করে না। ২০২১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত "WHO REPORT ON THE GLOBAL TOBACCO EPIDEMIC 2021" শীর্ষক প্রতিবেদনে ভেপিং, ই-সিগারেটের মতো ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস (ইটিপি) গুলোকে "মারাত্মক স্বাস্থ্য হুমকি" হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে যে, ভেপিংয়ের পরোক্ষ ধোঁয়া (secondhand smoke) স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।

বেন্ডস্টা বলছে, কনজ্যুমার চয়েজ সেন্টার এর হিসেব অনুযায়ী ভেপিংয়ের প্রচলনে বাংলাদেশে ৬২ লাখের বেশি ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে ভেপিং-এ আসবে। উল্লেখ্য, কনজ্যুমার চয়েজ সেন্টার (সিসিসি) নিজেই তামাক কোম্পানির মদদপুষ্ট প্রতিষ্ঠান, যা জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) এবং ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনাল- এর কাছ থেকেও অর্থ গ্রহণ করে থাকে। বেন্ডস্টা আরো বলছে, “অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ ভেপিং-এর সুফল বিবেচনা করে তা খোলা বাজারে বাজারজাতকরণ বিষয়ে প্রথমবারের মতো অনুমোদন দিয়েছে।” সংগঠনটির এই দাবি সত্যের বিকৃতি ব্যতীত আর কিছুই নয়। ২০১৬ সালে ইউএস সার্জন জেনারেল কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ই-সিগারেট এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোকে ‘অনিরাপদ’ তালিকাভুক্ত করা হয়। ২০১৯ সালে ই-সিগারেট এবং ভেপিং ব্যবহারের কারণে ৪২ জনের মৃত্যু প্রমাণিত হওয়ায় ভেপিং-এর ব্যবহার ও বিপণনে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করে নীতিমালা প্রণয়ন করে দেশটির ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।

সংগঠনটির দাবি, ভেপিং সংক্রান্ত যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তাদের সাথে আলোচনা করতে হবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) আর্টিকেল ৫.৩ গাইডলাইনস অনুসারে, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক আইন বা বিধি প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত এমন কোন গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ গ্রহণ করার কোন সুযোগ নাই। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এফসিটিসি’র প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। আমাদের দাবি, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেটসহ সব ধরনের ভেপিং পণ্যের আমদানি, ক্রয়-বিক্রয় এবং বিপণন নিষিদ্ধ করতে হবে।